দৈনিক প্রত্যয় প্রতিবেদকঃ যৌথ ব্যবসার কথা বলে চার্লস রূপম সরকারের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন হেলাল উদ্দিন। কথা ছিল লভ্যাংশের একটি অংশ রূপমকে দেওয়া হবে। কিন্তু একপর্যায়ে হেলাল লভ্যাংশ দূূূরের কথা, বিনিয়োগকৃত ৬০ হাজার টাকার কথাও অস্বীকার করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হেলালকে হত্যার পরিকল্পনা করেন রূপম।
গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) রাজধানীর উত্তরা ও দক্ষিণখান থেকে হেলালের ব্যবসায়িক অংশীদার চার্লস রূপম সরকারের স্ত্রী শাহিনা আক্তার মনি ও শাশুড়ি রাশিদা আক্তারকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গ্রেপ্তারের পর তারা এসব তথ্য জানিয়েছে।
ডিবি কর্মকর্তারা জানান, হেলাল উদ্দিনের বাড়ি পিরোজপুর জেলার নেছারাবাদ থানার দইহাড়ি গ্রামে। মাদ্রাসায় পড়াশুনার পাশাপাশি দক্ষিণখানের আজমপুরে মোবাইল ফোন রিচার্জের ব্যবসা করতেন হেলাল। কোরানে হাফেজ হেলাল গত রবিবার (১৪ জুন) রাত থেকে নিখোঁজ হন।
গত মঙ্গলবার (১৬ জুন) দক্ষিণখানের গাওয়াইর এলাকা থেকে মস্তক। বিমানবন্দর এলাকার ইর্শ্বাল কলোনী মাঠের পাশের একটি ঝোপ থেকে গলা থেকে নাভি ও দক্ষিণখানের বটতলা এলাকা থেকে কোমর থেকে পায়ের অংশ ক্ষতবিক্ষত মরদেহের তিন খণ্ড তিন জায়গা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
একটি মরদেহের তিন খণ্ড তিন জায়গা থেকে উদ্ধারের পর তদন্ত শুরু করে ডিবির উত্তর বিভাগ। প্রথমে মরদেহের পরিচয় পাওয়া যায়নি। পরে আঙুলের ছাপের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র বের করে পরিচয় শনাক্ত করা হয়। দক্ষিণখান থানায় নিহতের বড় ভাই হুজায়ফা হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
এ ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে রূপমকে শনাক্ত করে ডিবি পুলিশ।
ডিবি উত্তর বিভাগের বিমানবন্দর জোনাল টিমের এডিসি কায়সার রিজভী কোরায়েশী জানান, ফটোস্ট্যাট মেশিন বিক্রি করবেন বলে হেলালকে নিজের বাসায় ডাকেন রূপম। বাসায় এলে পরিকল্পনা অনুযায়ী হেলালকে ঘুমের ট্যাবলেট মেশানো চা পান করতে দেওয়া হয়। হেলাল চা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। তখন রূপম ও তার স্ত্রী শাহিনা আক্তার মনি মিলে টিভির ডিশ লাইনের তার দিয়ে ঘুমন্ত হেলালের গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন। এরপরে লাশ টেনে বাসার টয়লেটে নিয়ে যান। সেখানে রূপম তার স্ত্রী মনি ও শাশুড়ি রাশিদা আক্তারকে নিয়ে বঁটি দা ও চাকু দিয়ে হেলালের লাশ তিন টুকরা করে টুকরা তিনটি বস্তা ও ব্যাগে পুরে ভাড়া করা অটোরিকশার মাধ্যমে তিন জায়গায় ফেলে দেন।
গতকাল শুক্রবার (১৯ জুন) মনি ও তার মা রাশিদা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নৃশংস এ হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করেন। মূল হোতা চার্লস রূপম সরকার পলাতক রয়েছে।